▌কবরের আযাবের ভয়াবহতা ও সালাত পরিত্যাগকারীর দাফনের নিয়ম
সৌদি আরবের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি, শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম শাইখ আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায (রহিমাহুল্লাহু তা'আলা)
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
প্রশ্নকর্তাঃ ইয়া শাইখ, [এই প্রশ্নটি] এই বিষয়ে যে একজন ইন্তেকাল করেছেন, যখন তার দেহকে গোসলের জন্য রাখা হলো, তার মাথা কিবলা থেকে সরে গেলো, এবং যতক্ষণ না তারা তাকে গোসল দেয়া শেষ করলো[সেটা কিবলার বিপরীতেই থাকলো]। একই জিনিস তাকে কবরে দাফন করার সময়েও ঘটেছে, আমি নিজে এই ঘটনা দেখেছি। আমি তার পরিবারকে জিজ্ঞেস করলাম কেন এমন ঘটছে? তারা উত্তর দিলো, 'শুধু আল্লাহর কাছে তার জন্য ক্ষমা চাও।' আমি বুঝতে চেষ্টা করলাম যে কেন এমন ঘটছে। তারা বললো, ' সে সালাত আদায় করতো না, এবং প্রায়ই মদ্যপান করতো।'
শাইখ বিন বায ( رَحِمَهُ ٱللّٰهُ): এটি খুব ভয়াবহ ব্যাপার। এটি বহু মানুষের সাথে হয়েছে।
প্রশ্নকর্তাঃ ইয়া শাইখ, আমরা কি দুয়া করতে পারি যে আল্লাহ যাতে তাকে ক্ষমা করে দেন?
বিন বাযঃ যে সালাত আদায় করেনা-তার গোসল দেয়া ও জানাজার সালাত পড়ানো উচিৎ নয়!
অনেকেই কবরের [আযাবের] নিদর্শন দেখেছেন।
তারা হয়তো [তারা পুনরায়]কবর খনন করে থাকে যখন কোন বস্তু তারা কবরেই ফেলে আসে[যেমন-কোদাল]।
ইবনে রজব( رَحِمَهُ ٱللّٰهُ) তার আহওয়ালুল কুবুর গ্রন্থে অনেক অদ্ভুত কাহিনী উল্লেখ করেছেন-
কেউ হয়তো পুনরায় কবর খনন করে যখন তারা তাদের কোদাল ভুলে যায়, যখন তারা খনন শেষ করে, তারা সেই কোদালকে মৃতের ঘাড়ে [গেথে দেয়া অবস্থায়] পেয়ে থাকে, আগুনে জলন্ত অবস্থায়।
কিছু সময় তারা সম্পুর্ন মৃতদেহকে আগুনে জলন্ত অবস্থায় পেয়ে থাকে।
এটা আল্লাহর ক্ষমতার নিদর্শন!
প্রায়শই তারা যখন মৃতের পরিচিত ব্যক্তিদের জিজ্ঞেস করে,তারা জানতে পারে যে মৃত ব্যক্তিটি সালাত আদায় করতো না অথবা যাকাত দিত না!
এই ৩৫ বছর পূর্বে, একজন বেদুঈন আমার কাছে একটি কাহিনী বললো: "কিছু ব্যক্তি আমাকে বললো তারা আমার খালাকে কবরে চিৎকার করতে শুনেছে।
প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটি একটি অদ্ভুত বিষয়, তবে বহুদিন পরে আমরা যখন ঐ কবরের কাছে যাই এবং একটি লোক সেই একই কবর থেকে আবার চিৎকারের আওয়াজ আসতে শুনে।"
তখন সে তার আত্মীয়দের জিজ্ঞেস করলো তার[বেদুঈনের খালা] ব্যাপারে,তারা বললোঃ"সে যাকাত দিতো না। " সে বহুদিন ধরে চিৎকার করছে আর তার চিৎকার তার কবরের বাইরে থেকেও শোনা যেতো।
ইবনু ‘আববাস (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা দু’টি কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। এ সময় তিনি বললেনঃ এদের ‘আযাব দেয়া হচ্ছে, কোন গুরুতর অপরাধের জন্য তাদের শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। তাদের একজন পেশাব হতে সতর্ক থাকত না। আর অপরজন চোগলখোরী করে বেড়াত।[বুখারী ও মুসলিম]
নবী(ﷺ) বলেছেন যে একজনের শাস্তি হচ্ছিলো কারন সে নাপাকী থেকে নিজেকে পরিষ্কার করেনি।
যে নিজেকে নাপাকী থেকে পরিষ্কার করলোনা- তারা সালাত বৈধ হলোনা।
দ্বিতীয় ব্যক্তি মানুষের মাঝে গুজব ও অপবাদ ছড়াতো এই বলে, 'অমুক তোমার ব্যাপারে এই বলেছে,তমুক তোমার ব্যাপারে সেই বলেছে'।এটি মানুষের মধ্যে আগুনের [বিভেদ] সৃষ্টি করে।
তো,কবরে অনেক ভয়াবহ আযাব হয়ে থাকে।আমরা আল্লাহর কাছে মাগফিরাত কামনা করি।
প্রশ্নকর্তাঃ ইয়া শাইখ, শাইখ ইবনে উসাইমীন [রহিমাহুল্লাহু তা'আলা] এর বইয়ে একটি ফতোয়া উল্লেখিত রয়েছে যেখানে তিনি বলেছেন যে যদি এমন কেউ ইন্তেকাল করে যে সালাত আদায় করতোনা, তার অভিভাবকেরা যাতে জানিয়ে দেয় যে সে সালাত আদায় করতোনা যে কারনে তার জানাজার সালাত আদায় করা হবেনা ও মুসলিম কবরস্থানে দাফন করা হবেনা।
বিন বাযঃ জ্বি,তিনি সঠিক বলেছেন।
যদি সালাত ত্যাগকারী ব্যাক্তি ইন্তেকাল করে, তাকে মুসলিমদের থেকে দূরে দাফন করতে হবে, এমন এলাকায় যেটা সবার কাছে অপরিচিত।
প্রশ্নকর্তাঃ তাহলে তাদের ব্যাপারে কি মত যারা তাকে[সালাত পরিত্যাগকারী] মুসলিম কবরস্থানে দাফন করে?
বিন বাযঃ [তারা এটা] অজ্ঞতা ['র বসে করে থাকে]
.
অনুবাদকঃ শাফাত সামীন
.
সংগৃহীত: Ahlus Sunnah Wal Jama'ah
Comments
Post a Comment